বাংলাদেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর, যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্সের প্রবাহ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনের অনুযায়ী, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে প্রবাসী আয় প্রেরণকারী দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এর আগে, আগস্ট মাসে প্রবাসী আয় প্রেরণকারী দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষে ছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)। তবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে রেমিট্যান্সের প্রবাহ সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে আগের তুলনায় অনেক বেড়ে গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবর মাসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রবাসী আয় এসেছে প্রায় ৫০ কোটি মার্কিন ডলার, যা জুলাই মাসের ২৪ কোটি ডলারের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি। আগস্ট মাসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসেছিল ২৯ কোটি ডলার, যা জুলাইয়ের তুলনায় ৫ কোটি ডলার বেশি ছিল। সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসেছে ৩৯ কোটি ডলার, যা আগস্টের তুলনায় ১০ কোটি ডলার বা ৩৪ শতাংশ বেশি। অক্টোবরে এসে এটি ৫০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে, যা সেপ্টেম্বরের তুলনায় ১১ কোটি ডলার বা ২৮ শতাংশ বেশি।
এছাড়া, রাজনৈতিক পরিবেশে পরিবর্তনের পর প্রবাসী আয় বাড়তে শুরু করেছে। ২০২৩ সালের জুলাইয়ে শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলন পর গণ-আন্দোলনে রূপ নিলে ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তবর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেয়, এবং রাজনৈতিক পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে প্রবাসী আয়ও বাড়তে থাকে।
অপরদিকে, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) থেকে প্রবাসী আয় আসা গত কয়েক মাসে বেশ স্থিতিশীল ছিল। ইউএই থেকে জুলাই, আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে প্রবাসী আয় এসেছিল যথাক্রমে ৩৩, ৩৪, ৩৬ ও ৩৩ কোটি ডলার, যা মোটামুটি একই পরিমাণ ছিল। ফলে ইউএই প্রবাসী আয় প্রেরণের দিক থেকে দ্বিতীয় স্থানে চলে এসেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অক্টোবরে দেশে মোট প্রবাসী আয় এসেছে প্রায় ২৪০ কোটি ডলার। এর মধ্যে ২১ শতাংশ বা ৫০ কোটি ডলার এসেছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে, আর প্রায় ১৪ শতাংশ এসেছে ইউএই থেকে। এই দুটি দেশ থেকে আসা প্রবাসী আয় মোট প্রবাসী আয়ের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ, যা ৮৩ কোটি ডলার।
অতএব, যুক্তরাষ্ট্রের প্রবাসী আয় প্রবাহে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে, বিশেষ করে রাজনৈতিক পরিবেশের পরিবর্তনের পর এটি আরও শক্তিশালী হয়েছে।